এক শ’ কোটি টাকার ইয়াবা ছাড়াতে ব্যর্থ প্রভাশালীদের নজিরবিহীন দৌঁড়ঝাপ!

নারায়গঞ্জ জেলা পুলিশের অনড় অবস্থানের কারনেই এবার প্রায় এক শ’ কোটি টাকা মুল্যের ৯২ হাজার পিস ইয়াবার সংঘবদ্ধ চোরাচালানীদের বাঁচাতে নজিরবিহীন তদবির চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে নানা পেশার প্রভাবশালী একটি চক্র। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের এক নেতার নামও ফাঁস হয়েছে! এদিকে, ঘটনাটির ব্যাপকতায় সাংঘাতিক আলোড়ন তুলেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।
মূলত: জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের শক্ত অবস্থানের কারণেই এ চালান ছাড়াতেই পারেননি যুবলীগের আলোচিত ওই নেতাসহ গনমাধ্যমের নাম-পরিচয় ও পদ ভাঙ্গানো চিহ্নিত গুটিকয় দূর্বৃত্ত। পরবর্তীতে অধিকতর তদন্ত করে পুলিশ আরো দুই চোরাকারবারী এবং অর্থ যোগানদাতাকেও গ্রেফতার করেছে। পুলিশ অনৈতিক তদবিরের কাছে নতজানু ও আত্নসমর্পন না করেও পেশাদারিত্ব এবং অত্যন্ত সাহসীকতার সঙ্গে এ ঘটনার গুরুরহস্য উদঘাটনে চালায় ব্যাপক তদন্ত আর তথ্যানুসন্ধান। পুলিশ প্রশাসনের প্রশংসনীয়, বলিষ্ঠ এবং সাহসী তদন্ত-তৎপরতার ফলেই একের পর এক বেড়িয়ে আসতে শুরু করে আলোড়ন তোলা আর চাঞ্চল্যকর নানা নতুন তথ্য-উপাত্ত।
এদিকে, এরই মধ্যে ক্ষমতাধর এ চোরাকারবারী চক্রের নিম্নস্তরের কয়েক সদস্যকে আটক করে মুখোশ উন্মোচন করা সম্ভব হয়েছে।
অন্যদিকে, পুলিশ সুত্রে জানা যায়, তদবিরের কাজে যুবলীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও একটি আপকামিং একটি টেলিভিশন চ্যানেলের একজন রিপোর্টার, ওই চ্যানেলের এমডি পরিচয়দানকারী কমিউনিস্ট পাটির এক নেতা এবং চ্যানেলটির পরিচালক পরিচয়দানকারী নড়াইলের অধিবাসী বিএনপির এক নেতা যিনি কিনা এটিএন বাংলার নড়াইল জেলা প্রতিনিধি তিনিও জড়িত ঘৃন্য এ অপকর্মে নিবিড়ভাবে জড়িত! তাদের কেউ কেউ নারায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার ও ডিবি কর্মকর্তাদের নিকট ধর্না দিয়েও চোরাকারবারীদের ছাড়িয়ে নিতে পুরোপুরিভাবে ব্যর্থ হন।
এ ব্যাপারে ওই টিভি চ্যানেলের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের দুইজন জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার হলেও তিনি জড়িত ও লাইসেন্স ওনার জড়িত আছে কিনা সে বিষয়ে পুলিশ এখনও কোন তথ্য প্রকাশ করেনি। তবে ডিবি পুলিশের নিয়ন্ত্রণভারেই অত্যন্ত গুরুত্ববহ এ মামলাটির তদন্ত কাজ চলছে। এ পযন্ত ৭ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরন করেছে পুলিশ।
মুলত: গত ২৬ জুলাই প্রায় এক শ’ কোটি টাকা মুল্যের ৯২ হাজার পিস ইয়াবা, একটি পিস্তল ও নগদ এক লাখ টাকাসহ সংঘবদ্ধ এবং প্রভাবশালী ইয়াবা চোরাচালানী চক্রের ৫ সদস্যের একটি দলকে আটক করে ডিবি পুলিশের একটি বিশেষ টিম। নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইন বোর্ড এলাকার এ অভিযানে চোরাচালানী কাজে ব্যবহৃত রেজিষ্টেশনবিহীন একটি মাইক্রোবাসও জব্দ করে ডিবি পুলিশ। এ বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে ডিবি পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) মফিজুল ইসলাম বৃহৎ এ ইয়াবা চালানের অর্থদাতা এবং মুলহোতাসহ আরো দু’জনকে আটক করেন। তারা হলেন, ঢাকার পুরানা পল্টন পানির টাংকি এলাকার গাড়ি বিক্রয় প্রতিষ্ঠান খন্দকার ট্রেডিং করপোরেশনের দুই কর্মী।
এস আই মফিজুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘সংঘবদ্ধ ও প্রভাবশালী ইয়াবা চোরাচালানী এই চক্রটি এ রুট দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বড় বড় চালান পাস করে আসছিল। গত জুন-জুলাই এই দুই মাসেই তারা বড় বড় তিনটি চালান পাস করেছে-এমনই গোপন খবর পেয়ে তিনি অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হন। এরই ধারাবাহিকতায় দু’টি আন রেজিস্টার্ড মাইক্রোবাসের চালান ধরতে না পারলেও পরের আরেকটি মাইক্রোবাসসহ এক শ’ কোটি টাকা মুল্যের এই ইয়াবার চালানটি প্রমাণসহ আটক করতে সমর্থ হয়েছেন।’