ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে বিচারপতির শপথ ভঙ্গ?

স্বাধীনবাংলা২৪.কম
ঢাকা: সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার রায়ে বিচারপতির শপথ ভঙ্গের মত ঘটনা ঘটেছে কি না তা বিবেচনা করে দেখতে বলেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। তিনি জানান, সর্বোচ্চ আদালতের রায় মানতে সংসদ বাধ্য নয়। আর সংসদকে নির্দেশ দেয়ার ক্ষমতাও সুপ্রিম কোর্টের নেই।
শনিবার রাজধানীতে এক আলোচনায় খায়রুল হক এ কথা বলেন। তিনি কেন ষোড়শ সংশোধনীর রায়ের সমালোচনা করেছেন, সে কারণও ব্যাখ্যা করেন তিনি।
২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বিচারক অপসারণ ক্ষমতা সংসদে ফিরিয়ে এনে সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদে সংশোধনী আনে সরকার। এটি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিতি পায়। পরের বছর হাইকোর্টে এই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পর রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল গত ৩ জুলাই নাকচ করে দেয় আপিল বিভাগ। আর ১ আগস্ট প্রকাশ হয় পূর্ণাঙ্গ রায়। এই রায়ে ৯৬ অনুচ্ছেদের বাইরে গিয়ে সংসদ, শাসন ব্যবস্থাসহ নানা বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য করা হয়, যা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সরকার। এই রায়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতি অবমাননা করা হয়েছে অভিযোগ করে তিন দিনের কর্মসূচিও পালন করেছেন আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীরা।
এই রায় রিভিউয়ের আবেদন করার কথা জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এই আবেদনের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে সংসদকে অপরিপক্ক, সংসদকে অকার্যকর বলা হয়েছে। দুই দফা সংবাদ সম্মেলন করে এসব শব্দ ব্যবহারের সমালোচনা করেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক।
শনিবারের আলোচনায় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান এই শব্দগুলো উল্লেখ করে বলেন, “‘পার্লামেন্ট ইজ ইমম্যাচিওর’, ‘ডেমোক্রেসি ইজ ইমম্যাচিওর’, ‘পার্লামেন্ট আমাদের ডাইরেকশন শোনেনি’, এই কথাগুলো যদি অনুরাগ বিরাগের মধ্যে চলে আসে তাহলে সেই জজ সাহেবের পজিশনটাই বা কী হবে?”
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার প্রতি ইঙ্গিত করে খায়রুল হক বলেন, ‘তিনি ওথ বাউন্ড থাকছেন কি না, সেটাও আপনারা বিচার- বিবেচনা করে দেখুন। আমি পয়েন্ট আউট করে দিলাম। ওথ ভঙ্গ হলে কি হতে পারে? আপনারা জানেন কী হতে পারে।’
খায়রুল হক বলেন, ‘আমরা জজ সাহেবেরা কোনোদিনই অনুরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু করব না। রায়ে যদি কোনো অনুরাগ বা বিরাগ রিফ্লেক্ট করে, তাহলে হোয়াট ইজ দ্য কনসিকোয়েন্স অব দ্যট জাজমেন্ট। থিঙ্ক অ্যাবাউট ইট। আমার বলার কিছু নেই।’
ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে বক্তব্য দেয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে খায়রুল হক বলেন, ‘রায়ে ভুল কিছু থাকলে সেটা আইন কমিশনের কাজ। রায় নিয়ে কথা বলা আমাদের কর্তব্য। ’
সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ নিয়ে সাবেক এই প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দ্বৈত শাসনই হচ্ছে উত্তম ব্যবস্থা। কারণ বিচারপতিরা ফেরেস্তা না। তারাও ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারে।’
স্বাধীনবাংলা২৪.কম/এমআর