এ্যাম্বুলেন্স আছে চালক নেই: চরম ভোগান্তিতে মুমূর্ষু রোগীরা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে এ্যাম্বুলেন্স আছে, চালক নেই। চালক না থাকায় দীর্ঘ দিন গ্যারেজে অলস পড়ে আছে নতুন মডেলের সরকারী এ্যাম্বুলেন্সটি। চালকের অভাবে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগী সহ মুমূর্ষু রোগীদের কাজে আসছেনা আধুনিক এ্যাম্বুলেন্সটি। কবে নাগাদ চালকের সমস্যা সমাধান হবে তা জানেন না উপজেলা ¯^াস্থ্য কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়া জেলা সিভিল সার্জন।
কুষ্টিয়া শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দুরে মিরপুর উপজেলা ¯^াস্থ্য কমপ্লেক্স প্রায় প্রতিদিন সড়ক দূর্ঘটনায় আহতসহ মুমুর্ষ রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রয়োজন হয়।
মিরপুর পৌরসভাসহ পার্শ্ববর্তী পোড়াদহ, আমলা, সদরপুর, কুর্শা, মালিহাদ, চিথলিয়া, ধুবাইল, বারুইপাড়া,ছাতিয়ান, ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী দৌলতপুরের এক তৃতীয়াংশ সাধারণ মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল মিরপুর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সটি চালকের অভাবে সচল না থাকায় চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগী সহ মুমূর্ষু রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় সংসদ সদস্য হাসানুল হক ইনু এম.পি’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আধুনিক এ্যাম্বুলেন্সটি মিরপুর হাসপাতালে বরাদ্দ দেয়া হয়।
এবছরের জানুয়ারীতে স্বাস্থ্যসেবা জনগনের দোরগোড়ে নিশ্চিতকরণ প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা ¯^াস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন এ্যাম্বুলেন্স প্রদান করা হয়েছে।
মিরপুরের এ্যাম্বুলেন্স নষ্ট থাকার কারনে সেখানতার চালক নুরুজ্জামান খানকে মিরপুর থেকে তৎকালীন সিভিল সার্জনের মৌখিক নির্দেশে দৌলতপুর ¯^াস্থ্য কমপ্লেক্সের চালক হিসেবে শর্তসাপে¶ে দায়িত্ব দেওয়া হয়। (যাতে করে মিরপুরের এ্যাম্বুলেন্সটি আনা হলে তাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা হবে) পরবর্তীতে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন নিজে দৌলতপুর থেকে চালককে সরিয়ে তার নিজের গাড়ী চালক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করে। সেই চালকের বেতন উত্তোলন হয় মিরপুর থেকে।
ডেপুটেশনে আনা চালক তার নির্ধারিত কর্মস্থলে ফিরে না যাওয়ায় মিরপুর হাসপাতালের আধুনিক এ্যাম্বুলেন্সটি দীর্ঘ ৩ মাস ধরে অলস পড়ে আছে হাসপাতালের নির্ধারিত গ্যারেজে। অথচ এই এ্যাম্বুলেন্সটি সড়ক দূর্ঘটনায় আহত রোগী সহ মুমূর্ষু রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের জন্য প্রতি কিলোমিটারে দশ (১০) টাকা হারে ফি দিয়ে সাধারণ মানুষ ভাড়া নিয়ে সরকারী সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আসছিল। চালক না থাকায় এ্যাম্বুলেন্সের অভাবে এ অঞ্চলের গরীব অসহায় রোগীদের জরুরী প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসা সেবা পেতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ে ভাড়া করা প্রাইভেট এ্যাম্বুলেন্স বা অন্য কোনো যানবাহনের মাধ্যমে নিয়ে যেতে হয়।
এতে এ্যাম্বুলেন্স থাকা সত্বেও রোগীরা এ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
একটি সুত্রে জানায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চালক হলে প্রতিদিনই দায়িত্ব পালন করতে হয় এবং ষ্টেশনে অবস্থান করতে হয়। আর সিভিল সার্জনের চালক হওয়ায় অফিস সময়ে সপ্তাহে ৫দিন দায়িত্ব পালন করতে হয়।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা: রওশন আরা বেগম বলেন, এ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ হলেও চালকের পদ সৃষ্টি করা হয়নি। চালকের পদ না থাকায় মিরপুর উপজেলা ¯^াস্থ্য কমপ্লেক্স এর এ্যাম্বুলেন্স সেবা আপাতত বন্ধ রয়েছে। একময় তিনি ¶িপ্ত হয়ে উঠে বলেন আপনারা মন্ত্রী মহদোয়ের কাছে বলুন এ্যাম্বুলেন্স চালকের জন্য। তবে কবে নাগাদ এ সেবা দেওয়া হবে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উচ্চমহলের নির্দেশে কবে যে এ্যাম্বুলেন্স চালক আসবে তা আমরা ঠিক করে বলতে পারছি না। তবে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নিয়োগ হতে পারে বলেও জানান তিনি।