ভালোবাসার সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করতে যা করলেন এই দম্পতি

দু’দিন পরপর ঝগড়া, দু’দিন পরপর ছাড়াছাড়ি আর মানতে পারছিলেন না এক দম্পতি। পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা এবং স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ককে দীর্ঘস্থায়ী করতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। হাতকড়া দিয়ে নিজেদের বেঁধে নিয়েছেন তারা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে এমনই তথ্য জানা গেছে।
ইউক্রেনের বাসিন্দা আলেক্সান্দর কুডলে আর ভিক্টোরিয়া পুস্তোভিতোভা। তারা স্বামী-স্ত্রী। কিন্তু দু’জনের এতো ঝগড়া হতো যে এই দম্পতি দু’ দিন পরপরই আলাদা থাকতে বাধ্য হতেন। ঘনঘন ব্রেকআপে ক্লান্ত হয়ে সম্পর্কটাকে টিকিয়ে রাখতে অবশেষে হাতকড়া দিয়ে নিজেদের বেঁধে ফেলেছেন তারা। এখন সারা দিন সব জায়গায়, সব কাজেই দুজন একসঙ্গে থাকেন। হাতকড়াই এক রাখে তাদের।
বর্তমানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর খারকিভের ফ্ল্যাটেই থাকছেন আলেক্সান্দর আর ভিক্টোরিয়া। রয়টার্সকে তারা জানান, সবশেষ ছাড়াছাড়ির পর আলেক্সান্দর যথারীতি ফিরে আসার অনুরোধ জানানোয় ভিক্টোরিয়া বলেছিলেন, ‘দু দিন পরপর ঝগড়া আর ব্রেকআপে আমি ক্লান্ত।’ ব্যস, একপর্যায়ে ঠিক হলো এবার হাতকড়া পরে এক সঙ্গে থাকা শুরু করবেন। ফলে চাইলেও কেউ কাউকে ছেড়ে যেতে পারবে না। আর কিছুটা কষ্ট হলেও তাতে মজাও হবে।
কিন্তু এভাবে কতদিন থাকা যাবে? খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো, গোসল, ঘরের যাবতীয় কাজ, এমনকি পায়খানা-প্রস্রাবও হাতকড়া পরা অবস্থায় একসঙ্গে করা তো সহজ কথা নয়! না, ৩৩ বছর বয়সী আলেক্সান্দর আর ২৮ বছর বয়সী ভিক্টোরিয়া সারা জীবন এভাবেই কাটানোর কথা ভাবছেন না। এভাবে আপাতত তিনমাস থাকতে চান তারা।
হাতকড়া পরে জীবনযাপনের ছবি নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করছেন আলেক্সান্দর আর ভিক্টোরিয়া। অনেক মানুষ দেখছেন সেসব ছবি। সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে মরিয়া এই দম্পতির প্রশংসা করছেন অনেকেই।
এভাবে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা যাবে কি না এমন প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। তবে ইন্সটাগ্রামে অনেকে আবার আলেক্সান্দর-ভিক্টোরিয়াকে বলছেন, ‘লাভ কাপল’। তারা মনে করেন, সব সম্পর্কই ভেঙে যেতে পারে, তবে পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এভাবে পরস্পরের কাছে থাকার ইচ্ছা সবাই প্রকাশ করতে পারে না।
এদিকে, আজকাল ইউক্রেনের বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলের টক শো-তে ডাক পড়ে ভিক্টোরিয়া আর আলেক্সান্দরের। সেখানে গিয়ে ভালোবাসা টিকিয়ে রাখার জন্য তাদের এই উদ্যোগের পাশাপাশি সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্যতা, পারস্পরিক সম্মান ইত্যাদির গুরুত্ব নিয়ে কথা বলতে হয়।
হাতে হাতকড়া পরে এমন নয় যে ঝগড়া একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। আলেক্সান্দর জানালেন, ঝগড়া আগের মতোই হয়, তবে চাইলেও কেউ আর ব্যাগ গুছিয়ে চলে যেতে পারেন না। হাত তো বাঁধা, যাবেন কী করে! অগত্যা বাধ্য হয়েই থামাতে হয় ঝগড়া, ফিরতে হয় শান্তিময় স্বাভাবিক জীবনে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে।