ক্রেতার তুলনায় সরবরাহ বেশি, কমতে পারে পশুর দাম

ঢাকা : আর কয়েকদিন পরেই পবিত্র ঈদুল আজহা। সাধারণভাবে যেটি কোরবানির ঈদ নামে পরিচিত। পশু কোরবানির মাধ্যমে এই ঈদ পালন করার কারণে এই সময় কোরবানিযোগ্য পশুর দাম থাকে সবচেয়ে বেশি। তবে ধারনা করা হচ্ছে এবার কিছুটা কমতে পারে পশুর দাম।
কারণ হিসেবে ব্যবসায়ী এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি রয়েছে। সে কারণে পশুর দাম কিছুটা কমতে পারে।
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার কোরবানির জন্য এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে গতবারেরই উদ্বৃত্ত রয়েছে ১ লাখ। সব মিলিয়ে গতবারের মতো এবারও কোরবানির পর পশু উদ্বৃত্ত থাকবে বলে আশা মন্ত্রণালয়ের।
প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নথি অনুযায়ী, এবার কোরবানির জন্য সারা দেশের খামারি ও কৃষকরা এক কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার পশু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে গরু ও মহিষ ৪৪ লাখ ৫৭ হাজার। আর ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা ৭১ লাখ।
কোরবানির পশুর চাহিদা ও জোগানের বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাধ্যমে খামারি ও কৃষকদের মধ্য থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখা গেছে এবার সারা দেশে কোরবানিযোগ্য এক কোটি ১৫ লাখের বেশি পশু প্রস্তুত রয়েছে। গতবার এ সংখ্যা ছিল এক কোটি পাঁচ লাখ। কিন্তু গতবার কোরবানি হয়েছে এক কোটি চার লাখ পশু।
চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে প্রতিমন্ত্রী জানান, গত বছর চামড়া ব্যবসায়ীরা এক কোটি চার লাখের মতো চামড়া সংগ্রহ করেছেন। এই হিসাবে কোরবানির পশুর বিষয়ে তাঁদের করা হিসাব সঠিক বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নারায়ণ চন্দ্র বলেন, গতবার উদ্বৃত্ত ছিল এক লাখ। এবার চাহিদা পূরণের পরও কোরবানির পশু আরো বেশি সংখ্যায় উদ্বৃত্ত থাকবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘এবার আমাদের প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও ভারত, নেপাল ও মিয়ানমার থেকে গরু এসেছে। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চল ও চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ওই তিন দেশের অনেক গরু বেচাকেনা হচ্ছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। তা ছাড়া এবার বন্যায় ৩২টি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাওর অঞ্চলেও আগাম বন্যায় অনেক পরিবার ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। কোনো এলাকায় বন্যার কারণেই মানুষের মধ্যে কোরবানি নিয়ে অন্যান্য বছরের মতো তেমন একটা উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। অনেকের হয়তো সঙ্গতিও কমেছে।’
এ কারণেই এবার পশু কোরবানি অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হবে বলেও মনে করেন নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।
তবে দাম যেমনই হোক প্রতিমন্ত্রী চান, ক্রেতা বিক্রেতা সবাই যেন হাসিমুখে বাড়ি ফেরেন।
হাজারীবাগ ঝিগাতলা মাঠের পশুর হাটে যশোর থেকে গরু নিয়ে এসেছেন আলমগীর। তিনি বলেন, ভারতীয় গরু আসায় এবং হাটে পশুর তুলনায় ক্রেতা কম থাকায় এবার দাম তুলনামূলক কম। তবে এখনো সঠিক দাম মূল্যায়ন করা সম্ভব না। কারণ শেষ মুহূর্তে ক্রেতা-বিক্রেতার অবস্থা অনুযায়ী দাম বাড়তে বা কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি।